সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আমরা টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের তথা এদের উপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের স্বপ্নবিলাসী সদ্য টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের স্বপ্নের অপমৃত্যু তথা অন্ধকার ভবিষ্যত দেখছি।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের প্রবৃদ্ধি (১৪%) ছিল বিগত দশকের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের এক্সপোর্ট আরনিং ২৪.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার, যা টোটাল এক্সপোর্ট আরনিং এর প্রায় ৮৪% এবং জিডিপির প্রায় ১৯%। বিগত দশকে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি ছিল ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রায় ৪৮.৬ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরের এই সেক্টরের এক্সপোর্ট আরনিং ১২.৫ বিলিয়ন থেকে ২০১০-১১ অর্থবছরে গিয়ে দাড়ায় ১৭.৯১ বিলিয়ন ইউএস ডলার।
তখন টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের উন্নতি ছিল চোখে পড়ার মত, বর্তমান এন্টারপ্রনারদের রিইনভেস্টমেন্ট, নতুন এন্টারপ্রনারদের টেক্সটাইল সেক্টরে ইনভেস্টমেন্ট, ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট এসবের কারনে অনেক নিউ টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্টি গড়ে উঠেছিল, ফলশ্রুতিতে তখনকার সদ্য পাশ করা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা জব সুইচ করার সুযোগ টা পেত। আর আমাদের টেক্সটাইল সেক্টরের যে ট্রেডিশন তাতে জব সুইচ করতে না পারলে যতই পারফর্ম করুক করা কেন সেটার প্রোপার ইভ্যালুয়েশন হয়না। যেখানে জব সুইচ করলে দ্বিগুন স্যালারিতে অন্য কোম্পানি হায়ার করে, এমনকি সেইম কোম্পানিতে সেইম ডেজিগনেশনের কাউকে দ্বিগুন স্যালারিতে হায়ার করলেও আপনার স্যালারিতে সেটার কোন প্রভাব পররে না। এমন অসুস্থ মানসিকতা আমাদের টেক্সটাইল সেক্টরের ম্যানেজমেন্টের, ইভেন আমাদের সিনিয়রদেরও। যেন কেন জব চেইঞ্জ করতে পারছি না সেটাই আমাদের বড় অপরাধ।।
আমাদের ইনিশিয়াল স্যালারী বাংলাদেশের যেকোন সেক্টরের চেয়ে সর্বনিম্ন যেটাতে মিনিমাম লিভিং স্টান্ডার্ড ও মেইনটেন করা হয়না ইনএক্সপ্রিয়েন্সের দোহাই দিয়ে, যদিও তখনও সান্তনা খুজতাম এই ভেবে আমাদের ম্যাক্সিমাম স্যালারিওতো আনলিমিটেট, এইতো কিছুদিন কস্ট করে একটু এক্সপ্রিয়েন্স হলেই একটা স্টান্ডার্ড স্যালারিতে সুইচ করা যাবে।।
কিন্তু এখন সেই সুযোগটিও আর নেই বললেই চলে, যেটুকু হচ্ছে সেটাও অনেকটা ইন্টারনাল রিক্রুটমেন্ট হচ্ছে,সবার জন্য একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সুতরাং যা হবার তাই হচ্ছে, নড়ার কোন সুযোগ নেই, মরতে হলেও যেখানেই সে অবস্থায় আছ, সেখানেই সেই অবস্থাতেই মরো।।
বিগত কয়েক বছরে আমাদের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরে চোখে পরার মত কোন নতুন ইন্ডাস্টি গড়ে উঠেনি, বরং যা ছিল সেগুলোও অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। গত অর্থবছরে প্রতিকুল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে টেক্সটাইল এক্সপোর্টের ২৪.৫ বিলিয়ন ইউএসডি অর্জন সত্যিই অসাধারন, তবে এই যে ১৪% প্রবৃদ্ধি সেটার কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা, না রিইনভেস্টমেন্ট না ক্যাশ ফ্লো তথা লিকুইডিটিতে. এমনকি জব সেক্টরে আমাদের পজিশন, আমাদের ইকোনোমিক স্টান্ডার্ডে এই অর্জনের কোন বাস্তব প্রতিফলন চোখে পড়ছে না।
এখানে হয়ত অনেকেই মুদ্রাস্ফিতির কথা নিয়ে আসবেন, এটা শুধুমাত্র অর্থনিতির সামগ্রিক প্ররিস্থিতি নির্নায়কের জন্য বিবেচনা করা হয়। কোন কমার্শিয়াল ট্রান্সিকশন এমনকি ব্যাকিং সেক্টরেও মুদ্রাস্ফিতি বিবেচনা করা হয়না। সুতরাং মুদ্রাস্ফিতি আমাদের প্রবৃদ্ধি তথা টেক্সটাইল ও গার্মেন্টশ শিল্পের গ্রোথের জন্য কোন ভাইটাল ফ্যাক্টর নয়।
যেহেতু নতুন ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে না সুতরাং ইমপ্লোয়মেন্টও হচ্ছে না, ফ্রেশ ইঞ্জিনিয়াররা তাই বেকার হয়ে বসে আছেন। নতুন ইন্ডাস্ট্রি না হবার অন্যতম হল রাজনৈতিকঃ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা তথা দেশি বিদেশি বিনিয়োগের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিতকরনের অভাব। অবৈধ ভাবে বিদেশে টাকা পাচার রোধে কার্যকারি পদক্ষেপ না নেওয়া। ভয়াবহ জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় কোন দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের অভাব।
দ্বিতীয় কারন হল হঠাৎ করেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি পাওয়া, বর্তমান স্কেল ৫৩০০ টাকা যেটা কিনা পুর্বের স্কেল ৩০০০ টাকা থেকে প্রায় ৭৬.৬৬% বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যে অনেক শিল্প প্রতিস্টান বন্ধ হয়ে গেছে, যেগুলো টিকে আছে সেগুলোর অবস্থাও নাজুক।
দ্বিতীয়ত জ্বালানি সংকট তথা পাওয়ার সংকট বাংলাদেশের যেকোন শিল্পের জন্যই হুমকি স্বরুপ। আমাদের একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ জ্বালানি গ্যাস, সেটারও রিজার্ভ ব্লক গুলোতে কি পরিমান গ্যাস মজুদ আছে তার কোন সঠিক হিসেব নেই, যেগুলো আছে সেগুলোরও উত্তোলন করার সামর্থ কিংবা প্রচেস্টা তথা সদিচ্ছা আমাদের নেই, সেটার জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয় অক্সিডেন্টাল,নাইকোর, কনোকো ফিলিপসের মত বিদেশী কম্পানি গুলোর উপর, তাও আবার উৎপাদন বণ্টন চুক্তির (পিএসসি) মাধ্যমে যেমন কিছুদিন আগে কনোকো ফিলিপসের সাথে চুক্তি হল উত্তোলিত গ্যাসের শতকরা ৮০ ভাগ কনোকো-ফিলিপস পাবে এবং বাংলাদেশ পাবে ২০ ভাগ। সুতরাং বর্তমান ব্লগগুলো এবং রিজার্ভ ব্লকগুলো থেকে উত্তোলিত গ্যাসের ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, সংগত কারনেই আমাদের শিল্প, অর্থনীতি তথা আমাদের জ্বালানী নিরাপত্তার ভবিষ্যত অন্ধকারাচ্ছন্ন...
এই অবস্থা থেকে একটাই উওরনের পন্থা সেটা হল রিনিউয়াবল এনার্জির সর্বোচ্চ ব্যাবহার, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নদীর টাইডাল ফ্লো কাজে লাগিয়ে হাইড্রোলিক পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করা যেতে পারে, বাংলাদেশের একমাত্র হাইড্রোলিক পাওয়ার প্লান্ট কাপ্তাই বাধ যেখান থেকে সর্বোচ্চ মাত্র ২৩০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, অন্যদিকে চীন তাদের থ্রী জর্জ নামক হাইড্রোলিক পাওয়ার প্লান্ট দিয়ে ২২,৫০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
অথচ আমাদের সরকার দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনা না নিয়ে কুইক রেন্টাল প্লান্ট চালু করে দুর্নীতি ও লুটপাট করে কুইক বড়লোক হবার চেষ্টা করছে আর জনগনের আই তথা ব্রেইন ওয়াশ করার প্রচেস্টা চালাচ্ছে।
অপরদিকে সরকারের শীথিল নীতির কারনে মাল্টিন্যাশনাল কম্পানিগুলো এবং সেসব কম্পানি যারা ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট এর মাধ্যমে এদেশে প্রবেশ করছে, তারা এদেশে বিজনেস করে মিলিয়ন মিলিয়ন ইএসডলার তাদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ পৃথিবীর সকল দেশই এম এন সি গুলোকে রিইনভেস্ট করার সুযোগ দিলেও ক্যাপিটাল অথবা প্রোফিট নিজ দেশে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। বাংলাদেশে এসব ক্ষেত্রে কিছু ডিউটি ইম্পলিমেন্ট করা থাকলেও কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তার কারনে সেটাও পাওয়া হয়না।
সবশেষে সরকারের অবহেলা আর ইন্ডিয়ার চক্রান্তে আমাদের স্পিনিং সেক্টর আজ ধংসের মুখে। সেটার জন্য আমাদের কিছু মুনাফালোভী শিল্পমালিক ও দায়ি, তারা ইন্ডিয়ার লোভের ফাদে পা দিয়ে কিছুটা কম প্রাইসে ইন্ডিয়া থেকে সুতা ইম্পোর্ট করছে, ফলে দেশী স্পিনিং সেক্টর মার খাচ্ছে। যেমনটা ইন্ডিয়ার প্রোরোচনায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার এখন উচ্চমুল্যায়িত করা হল, যার ফলশ্রুতিতে আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্টান ধ্বংসের সম্মুখীন, অনেকগুলো ইতিমধ্যে ধবংস হয়ে গিয়েছে।
আমাদের স্পিনিং সেক্টর ধবংস হলে ইন্ডিয়া যে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির মত একচেটিয়া দাম বাড়িয়ে আমাদের বাধ্য করবে বেশি দামে সুতা কিনতে সেটা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি। সেটার প্রমান আমরা কিছুদিন আগেও দেখতে পেয়েছি, বিশ্ববাজারে তুলার উৎপাদন ও বাজার খারাপ দেখে ইন্ডিয়া ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের তুলা মজুদ করা শুরু করল, এবং কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে বাংলাদেশের জন্য ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে দিন।।বলাবাহুল্য ইন্ডিয়ার সুতার কোয়ালিটি এতটাই খারাপ এর ক্রেতা বাংলাদেশের মত কিছু দেশ ছাড়া আর কেউ নেই।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের প্রবৃদ্ধি (১৪%) ছিল বিগত দশকের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের এক্সপোর্ট আরনিং ২৪.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার, যা টোটাল এক্সপোর্ট আরনিং এর প্রায় ৮৪% এবং জিডিপির প্রায় ১৯%। বিগত দশকে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি ছিল ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রায় ৪৮.৬ শতাংশ। ২০০৯-১০ অর্থবছরের এই সেক্টরের এক্সপোর্ট আরনিং ১২.৫ বিলিয়ন থেকে ২০১০-১১ অর্থবছরে গিয়ে দাড়ায় ১৭.৯১ বিলিয়ন ইউএস ডলার।
তখন টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের উন্নতি ছিল চোখে পড়ার মত, বর্তমান এন্টারপ্রনারদের রিইনভেস্টমেন্ট, নতুন এন্টারপ্রনারদের টেক্সটাইল সেক্টরে ইনভেস্টমেন্ট, ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট এসবের কারনে অনেক নিউ টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্টি গড়ে উঠেছিল, ফলশ্রুতিতে তখনকার সদ্য পাশ করা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা জব সুইচ করার সুযোগ টা পেত। আর আমাদের টেক্সটাইল সেক্টরের যে ট্রেডিশন তাতে জব সুইচ করতে না পারলে যতই পারফর্ম করুক করা কেন সেটার প্রোপার ইভ্যালুয়েশন হয়না। যেখানে জব সুইচ করলে দ্বিগুন স্যালারিতে অন্য কোম্পানি হায়ার করে, এমনকি সেইম কোম্পানিতে সেইম ডেজিগনেশনের কাউকে দ্বিগুন স্যালারিতে হায়ার করলেও আপনার স্যালারিতে সেটার কোন প্রভাব পররে না। এমন অসুস্থ মানসিকতা আমাদের টেক্সটাইল সেক্টরের ম্যানেজমেন্টের, ইভেন আমাদের সিনিয়রদেরও। যেন কেন জব চেইঞ্জ করতে পারছি না সেটাই আমাদের বড় অপরাধ।।
আমাদের ইনিশিয়াল স্যালারী বাংলাদেশের যেকোন সেক্টরের চেয়ে সর্বনিম্ন যেটাতে মিনিমাম লিভিং স্টান্ডার্ড ও মেইনটেন করা হয়না ইনএক্সপ্রিয়েন্সের দোহাই দিয়ে, যদিও তখনও সান্তনা খুজতাম এই ভেবে আমাদের ম্যাক্সিমাম স্যালারিওতো আনলিমিটেট, এইতো কিছুদিন কস্ট করে একটু এক্সপ্রিয়েন্স হলেই একটা স্টান্ডার্ড স্যালারিতে সুইচ করা যাবে।।
কিন্তু এখন সেই সুযোগটিও আর নেই বললেই চলে, যেটুকু হচ্ছে সেটাও অনেকটা ইন্টারনাল রিক্রুটমেন্ট হচ্ছে,সবার জন্য একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সুতরাং যা হবার তাই হচ্ছে, নড়ার কোন সুযোগ নেই, মরতে হলেও যেখানেই সে অবস্থায় আছ, সেখানেই সেই অবস্থাতেই মরো।।
বিগত কয়েক বছরে আমাদের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরে চোখে পরার মত কোন নতুন ইন্ডাস্টি গড়ে উঠেনি, বরং যা ছিল সেগুলোও অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। গত অর্থবছরে প্রতিকুল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে টেক্সটাইল এক্সপোর্টের ২৪.৫ বিলিয়ন ইউএসডি অর্জন সত্যিই অসাধারন, তবে এই যে ১৪% প্রবৃদ্ধি সেটার কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা, না রিইনভেস্টমেন্ট না ক্যাশ ফ্লো তথা লিকুইডিটিতে. এমনকি জব সেক্টরে আমাদের পজিশন, আমাদের ইকোনোমিক স্টান্ডার্ডে এই অর্জনের কোন বাস্তব প্রতিফলন চোখে পড়ছে না।
এখানে হয়ত অনেকেই মুদ্রাস্ফিতির কথা নিয়ে আসবেন, এটা শুধুমাত্র অর্থনিতির সামগ্রিক প্ররিস্থিতি নির্নায়কের জন্য বিবেচনা করা হয়। কোন কমার্শিয়াল ট্রান্সিকশন এমনকি ব্যাকিং সেক্টরেও মুদ্রাস্ফিতি বিবেচনা করা হয়না। সুতরাং মুদ্রাস্ফিতি আমাদের প্রবৃদ্ধি তথা টেক্সটাইল ও গার্মেন্টশ শিল্পের গ্রোথের জন্য কোন ভাইটাল ফ্যাক্টর নয়।
যেহেতু নতুন ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে না সুতরাং ইমপ্লোয়মেন্টও হচ্ছে না, ফ্রেশ ইঞ্জিনিয়াররা তাই বেকার হয়ে বসে আছেন। নতুন ইন্ডাস্ট্রি না হবার অন্যতম হল রাজনৈতিকঃ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা তথা দেশি বিদেশি বিনিয়োগের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিতকরনের অভাব। অবৈধ ভাবে বিদেশে টাকা পাচার রোধে কার্যকারি পদক্ষেপ না নেওয়া। ভয়াবহ জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় কোন দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের অভাব।
দ্বিতীয় কারন হল হঠাৎ করেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি পাওয়া, বর্তমান স্কেল ৫৩০০ টাকা যেটা কিনা পুর্বের স্কেল ৩০০০ টাকা থেকে প্রায় ৭৬.৬৬% বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যে অনেক শিল্প প্রতিস্টান বন্ধ হয়ে গেছে, যেগুলো টিকে আছে সেগুলোর অবস্থাও নাজুক।
দ্বিতীয়ত জ্বালানি সংকট তথা পাওয়ার সংকট বাংলাদেশের যেকোন শিল্পের জন্যই হুমকি স্বরুপ। আমাদের একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ জ্বালানি গ্যাস, সেটারও রিজার্ভ ব্লক গুলোতে কি পরিমান গ্যাস মজুদ আছে তার কোন সঠিক হিসেব নেই, যেগুলো আছে সেগুলোরও উত্তোলন করার সামর্থ কিংবা প্রচেস্টা তথা সদিচ্ছা আমাদের নেই, সেটার জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয় অক্সিডেন্টাল,নাইকোর, কনোকো ফিলিপসের মত বিদেশী কম্পানি গুলোর উপর, তাও আবার উৎপাদন বণ্টন চুক্তির (পিএসসি) মাধ্যমে যেমন কিছুদিন আগে কনোকো ফিলিপসের সাথে চুক্তি হল উত্তোলিত গ্যাসের শতকরা ৮০ ভাগ কনোকো-ফিলিপস পাবে এবং বাংলাদেশ পাবে ২০ ভাগ। সুতরাং বর্তমান ব্লগগুলো এবং রিজার্ভ ব্লকগুলো থেকে উত্তোলিত গ্যাসের ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, সংগত কারনেই আমাদের শিল্প, অর্থনীতি তথা আমাদের জ্বালানী নিরাপত্তার ভবিষ্যত অন্ধকারাচ্ছন্ন...
এই অবস্থা থেকে একটাই উওরনের পন্থা সেটা হল রিনিউয়াবল এনার্জির সর্বোচ্চ ব্যাবহার, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নদীর টাইডাল ফ্লো কাজে লাগিয়ে হাইড্রোলিক পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করা যেতে পারে, বাংলাদেশের একমাত্র হাইড্রোলিক পাওয়ার প্লান্ট কাপ্তাই বাধ যেখান থেকে সর্বোচ্চ মাত্র ২৩০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, অন্যদিকে চীন তাদের থ্রী জর্জ নামক হাইড্রোলিক পাওয়ার প্লান্ট দিয়ে ২২,৫০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
অথচ আমাদের সরকার দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনা না নিয়ে কুইক রেন্টাল প্লান্ট চালু করে দুর্নীতি ও লুটপাট করে কুইক বড়লোক হবার চেষ্টা করছে আর জনগনের আই তথা ব্রেইন ওয়াশ করার প্রচেস্টা চালাচ্ছে।
অপরদিকে সরকারের শীথিল নীতির কারনে মাল্টিন্যাশনাল কম্পানিগুলো এবং সেসব কম্পানি যারা ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট এর মাধ্যমে এদেশে প্রবেশ করছে, তারা এদেশে বিজনেস করে মিলিয়ন মিলিয়ন ইএসডলার তাদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ পৃথিবীর সকল দেশই এম এন সি গুলোকে রিইনভেস্ট করার সুযোগ দিলেও ক্যাপিটাল অথবা প্রোফিট নিজ দেশে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। বাংলাদেশে এসব ক্ষেত্রে কিছু ডিউটি ইম্পলিমেন্ট করা থাকলেও কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তার কারনে সেটাও পাওয়া হয়না।
সবশেষে সরকারের অবহেলা আর ইন্ডিয়ার চক্রান্তে আমাদের স্পিনিং সেক্টর আজ ধংসের মুখে। সেটার জন্য আমাদের কিছু মুনাফালোভী শিল্পমালিক ও দায়ি, তারা ইন্ডিয়ার লোভের ফাদে পা দিয়ে কিছুটা কম প্রাইসে ইন্ডিয়া থেকে সুতা ইম্পোর্ট করছে, ফলে দেশী স্পিনিং সেক্টর মার খাচ্ছে। যেমনটা ইন্ডিয়ার প্রোরোচনায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার এখন উচ্চমুল্যায়িত করা হল, যার ফলশ্রুতিতে আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্টান ধ্বংসের সম্মুখীন, অনেকগুলো ইতিমধ্যে ধবংস হয়ে গিয়েছে।
আমাদের স্পিনিং সেক্টর ধবংস হলে ইন্ডিয়া যে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির মত একচেটিয়া দাম বাড়িয়ে আমাদের বাধ্য করবে বেশি দামে সুতা কিনতে সেটা কি আমরা কখনো ভেবে দেখেছি। সেটার প্রমান আমরা কিছুদিন আগেও দেখতে পেয়েছি, বিশ্ববাজারে তুলার উৎপাদন ও বাজার খারাপ দেখে ইন্ডিয়া ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের তুলা মজুদ করা শুরু করল, এবং কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে বাংলাদেশের জন্য ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে দিন।।বলাবাহুল্য ইন্ডিয়ার সুতার কোয়ালিটি এতটাই খারাপ এর ক্রেতা বাংলাদেশের মত কিছু দেশ ছাড়া আর কেউ নেই।
No comments:
Post a Comment